নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং বিভাগ যেন স্বর্ণের খনি বিভাগের দায়িত্বে আসলেই অনেকেই হাতে পেয়ে যায় আলাদিনের চেরাগ ঘষা দিলেই শুধু টাকা, ইতিপূর্বেও ড্রেজিং বিভাগের দায়িত্বে থাকা অনেক প্রকৌশলী শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করে কামিয়াছেন, দুর্নীতিবাজদের সব প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ কার্যকর হয় না অবৈধ অর্থের প্রভাবে সবকিছু ম্যানেজ করে নেন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলেও এগুলোর কেউ তোয়াক্কা করে না একাধিক অভিযোগ আছে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য দেখা যায় ড্রেজিং বিভাগে ভয়াবহ দুর্নীতি অনিয়ম করেও আছেন বহাল তবিয়তে।
বেশ কিছু প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গাইবান্ধার বালাশী ঘাট থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার নৌপথ এবং দুই প্রান্তে টার্মিনাল নির্মাণে ২০২১ সালের জুনে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়। তবে নাব্য সংকটের কারণে একদিনও ফেরি চলাচল সম্ভব হয়নি। কিছুদিন লঞ্চ চললেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
অভিযোগ রয়েছে, যমুনার ওই অংশে নৌপথ চালু রাখা প্রায় অসম্ভব জেনেও প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল, যা সরকারি অর্থের বিশাল অপচয় করা হয়েছিল আরো কিছু তথ্য দেখা যায় ভোগাই ও কংস নদী খননের জন্য ১৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও অভিযোগ রয়েছে যে, প্রকৃতপক্ষে কোনো খননই করা হয়নি, বরং পুরো অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে এবং বেশ কিছু অনিয়মের প্রমাণ পায়। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হচ্ছে না অদৃশ্য কারণে।
২০০৩ সালে বিআইডব্লিউটিএতে চাকরিতে যোগদান করেন ২২ বছরে হয়ে গেছেন কয়েকশো কোটি টাকার সম্পদের মালিক বিভিন্ন অনুসন্ধান ও প্রকাশিত গণমাধ্যমের তথ্যে উঠে এসেছে সম্পদের পাহাড় সম্পদের বিবরণীতে রয়েছে
২০২০ সালে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, তার স্ত্রী শামিমা আক্তার এবং বিআইডব্লিউটিএ'র উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়ার সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়। চার বছরেও তাদের হিসেব বিবরণীর কাজ শেষ হয়নি। মামলা থেকে দায়মুক্তি প্রদানের অদৃশ্য ইঙ্গিত থাকায় দুদক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সাইদূর রহমানের মামলার তারিখ লম্বা ডেট দিয়ে সময় ক্ষেপণ করছেন। আবার তারিখ পরলেও বেশি মামলা থাকায় তার শুনানি হয়না। এমন সব অযুহাতে ঝুলে আছে সাইদুর রহমানের মামলার তদন্ত কার্যক্রম।
অপর একটি সুত্রমতে, সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী শামিমা আক্তার তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই বাছাই চলছে। তবে সাইদুর রহমান উত্তরাধিকার সূত্রে বিপুল সম্পদের মালিক দেখিয়েছেন বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধানে মিথ্যা ও জালিয়াতি হিসাবে ধরা পড়েছে। তিনি দুদকের দায়ের করা মামলা থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালে তার জীবিত বাবাকে মৃত দাবি করেন। তিনি জীবিত পিতাকে মৃত দেখিয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে বাবার সম্পদের মালিক দাবি করে ছিলেন। তার এই মিথ্যা অপকৌশল এবং জঘন্য অপরাধ শুধু নিজে ভালো থাকার জন্য বেছে নিয়েছিলেন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার বেনগাছা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামে ১৯৭৩ সালে ১০ জুন সাইদুর রহমান একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ৫৫/৫৬ সিদ্ধেশ্বরীর ৪/এ আমিনাবাদ হাউজিং এ নিজের কেনা ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। খিলগাঁওয়ের ২৫/বি, এম ডব্লিউ মানামা হাইটস'র ৮ম তলায় ১৮০০ বর্গফুটের একটি অত্যাধুনিক ফ্ল্যাটও রয়েছে সাইদুর রহমানের। কুড়িগ্রাম শহরেও ৫০ কোটি টাকা খরচ করে রড-সিমেন্টের একটি বড় দোকান করেছেন সাইদুর রহমান। দোকানটি পরিচালনা করেন সাইদুর রহমানের ভাই আব্দুল আলীম। আর খিলগাঁওয়ের ফ্ল্যাটটি শশুরের বলে প্রচার করেন তিনি। এছাড়াও আরো বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অভিযোগ আছে পরিবারের চলাচলের জন্য রয়েছে একাধিক গাড়ি এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি, মালিকানা দেখিয়েছেন অন্যের নামে।
বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের আরো বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য অবৈধ অর্থে সম্পদের বিবরণ নিয়ে আসছে দ্বিতীয় পর্ব।